Tuesday 22 October 2019

বাক্‌ ১৩৮ ।। মোহিত তন্ময়



তোমাকেই বলছি 

১.

কসাইখানার স্বপ্নে
তুমি রাতদিন ঘুড়ি ওড়াও, ঘৃণা নিয়ে

লাটাই ফেলে উড়ে গেছে যে ঘুড়ি

তার চিৎকার থেকে ফিরে আসে লাল আকাশ।

এখন রাত নেই রাতের মতো কালো বিড়াল বসে থাকে দরজায়।

প্রাচীন নক্ষত্র তুমি, হে প্রেমিকা
মুহুর্মুহু উল্কাপাতের রাতেও তুমি চেয়েছো সঙ্গম।


২.

দূরবর্তি জাহাজের ভাঙা মাস্তুল তুমি,
যন্ত্রণার আড়ালে রেখে দাও কার অস্থিরতা ?

বুক জল, হাঁটু জল ... নিরাময় ফেলে চলে যায় দূরে

তটের এই আড়ষ্টতা দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রস্রাব করে,

এভাবেই জোয়ার আসে

জলের হাহাকারে . . . বুকের মধ্যে নিয়মিত মৃত মাছ সাঁতার কাটে।

৩.

এ কেমন শ্রাবন মাস
বৃষ্টি নেই, অন্ধ বালিহাঁস উড়ে যায় লাল আকাশে
অজস্র অন্ধকার . . .

শরীরের ভিতর বোবা পাখি ডাকে

মেঘের গায়ে লাথি মেরে যারা ফিরে গিয়েছিল শুকনো তটের দিকে,
তুমিও কি ছিলে তাদের সাথে ?

লোভ এক দুর্দমনীয় উপবাস
যন্ত্রণার দিনে যা আলো হয়ে ওঠে

এখন লুপ্তপ্রায় বিকেলে দাঁড়িয়ে দেখি -
তোমার স্তন থেকে ঝুলে পড়ছে সভ্যতা
ভেসে যাচ্ছে আমার অস্তিত্ব


৪.

ময়নাতদন্তের দিনেও বৃষ্টি নেই . . .
এমন অদ্ভুত আবহাওয়া আমি চাইনি

চেয়েছি এই অস্থি - রক্ত - মজ্জায়,
লেগে থাকুক মেঘ

নগ্ন শরীরের ভিতর
একটা ধোঁয়া এসে খুব সহজেই খুঁজে ফেলুক আশ্রয়

এখন গভীররাতে নগ্ন শরীর নিয়ে
তোমার স্তনে কান লাগাই . . .

শুনে নিই - বালিকার খিলখিল হাঁসির শব্দ

আজকাল
অস্তিত্বের দেওয়ালে যত্নে টানিয়ে রাখি পিছুটান।


৫.

দরজার ভিতর যে সুবিশাল জানলা লুকিয়ে থাকে
তোমাকে তা কেউ বলেনি

ডানাকাটা পাখি আর হওয়াদের সঙ্গম শেষ হলে পড়ে থাকে -

ভাঙা আকাশ, আর নিঃসঙ্গ খাঁচা
আর নগ্ন জানলা, আর ভঙ্গুর অস্তিত্ব।

ভাঙা আকাশের উপর থেকে তোমাকে দেখে অন্তঃস্বত্ত্বা মনে হয়।

নিঃসঙ্গ খাঁচার কাছাকাছি এসে দাঁড়ালে তোমাকে মুহুর্মুহু চিৎকার করা কোনো ভোরের পাখি বলে মনে হয়।

অনন্তকাল নগ্ন জানলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে তোমাকে প্রকৃত প্রেমিকা বলে ঘোষণা করা হবে।

এখন জলের হাহাকারে ভেঙে যায় দাঁড়,
তোমার ভঙ্গুর অস্তিত্বের উপর
হরদম বাঁশি বাজাক কোনো অন্ধ নাবিক ।


1 comment:

  1. বেশ ভালো। আগের থেকে ভালো হয়েছে।

    ReplyDelete