Tuesday 22 October 2019

বাক্‌ ১৩৮ ।। যাজ্ঞসেনী গুপ্ত



সনাতন চাষী


শালবনের ক্ষীণ রাস্তা ধুয়ে যায় অবহেলিত শ্রাবণে
একবার ডেকে ভাগানো ছেঁড়াখোঁড়া স্বরলিপি
সময়ের ফসিল চিনে রেখেছে ;
প্রেত যোনি হাওয়ার হা-হাযে কিনা নিষাদের হাতে নিহত

কে হিসেব রাখে কোমল না কালোয়াতি -?
আমার কষ্ট লিখিকবিতায়   
ছায়া পড়ে কে কোথায় কাকে  বুলেটে ফুঁড়েছে
বা নিরন্ন থালায় পড়ে আছে মরা নেংটি

আমাকেই ধারণ করি কবিতায় , অন্তত চেষ্টায় ,
তারপর সনাতন চাষী



সনাতন চাষী আড়াইটার সূর্য মাথায়-তার ফিরেছে ঘরে

হাইওয়ে আর নয়ানজুলি যেন একাল সেকাল;
মাঝে সংযোগে চালাঘরটি খোড়ো চালে ত্রিপল সুরক্ষাশ্রী

খুব কষে দু-শানকি ভাতপোড়া চামড়ার নীচে জমে ঘুম
তবু ছোটে , রঙিন টিভির কিস্তির চালে
ছুটকো এক কাজ ও অছিলা

বউ সিরিয়ালে ঢোকে
রাত নটায় যায় দীঘার সমুদ্রগামী দ্রুতবাস
সনাতন চাষী ফেরে তার টলায়মান পায়ে
নাকি হাইওয়ের স্বভাবেই পৃথিবী কাঁপে  



আকাশে বিরাট মৌচাকে মধু জমে ভারী হয়ে থাকত ,
আষাঢ় এলেই মালকোচা মেরে ঝরা শুরু
টানা বাদলে ঘর জবজবে , ব্যাঙও থাকত ঘরের কোণে

বাঁদি কিরষেণসনাতন সারাদিন
ঝমঝম বৃষ্টির সঙ্গে বেজে বেজে রুয়েছে খুব
চান করে এলে
গিন্নিমার হাতে শেষের ডালটা সূর্যাস্তের সঙ্গে পাতে ঢলে পড়তে

বিদেশাগত সাম্যের গানের এক বাঁও মেলে না
গামবুট আর দস্তানার কাহিনীর পট খোলেনি কোনোদিন !
শেষ পাতের চুনোমাছের সঙ্গে
ইউরিয়ার গন্ধ মাখা আঙুল চাটার শব্দ উঠছে ওই যে – !


No comments:

Post a Comment