সনাতন চাষী
১
শালবনের ক্ষীণ রাস্তা ধুয়ে যায় অবহেলিত শ্রাবণে।
একবার ডেকে ভাগানো ছেঁড়াখোঁড়া স্বরলিপি
সময়ের ফসিল চিনে রেখেছে ;
প্রেত যোনি হাওয়ার হা-হা – যে কিনা
নিষাদের হাতে নিহত
কে হিসেব রাখে কোমল না কালোয়াতি -?
আমার কষ্ট লিখি – কবিতায়
ছায়া পড়ে কে কোথায় কাকে বুলেটে ফুঁড়েছে
বা নিরন্ন থালায় পড়ে আছে মরা নেংটি …
আমাকেই ধারণ করি কবিতায় , অন্তত চেষ্টায়
,
তারপর সনাতন চাষী
২
সনাতন চাষী আড়াইটার সূর্য মাথায়-তার ফিরেছে ঘরে
হাইওয়ে আর নয়ানজুলি যেন একাল সেকাল;
মাঝে সংযোগে চালাঘরটি – খোড়ো চালে ত্রিপল
সুরক্ষাশ্রী
খুব কষে দু-শানকি ভাত – পোড়া চামড়ার
নীচে জমে ঘুম
তবু ছোটে , রঙিন টিভির কিস্তির চালে
ছুটকো এক কাজ ও অছিলা
বউ সিরিয়ালে ঢোকে –
রাত নটায় যায় দীঘার সমুদ্রগামী দ্রুতবাস ।
সনাতন চাষী ফেরে – তার টলায়মান পায়ে
নাকি হাইওয়ের স্বভাবেই পৃথিবী কাঁপে
৩
আকাশে বিরাট মৌচাকে মধু জমে ভারী হয়ে থাকত ,
আষাঢ় এলেই মালকোচা মেরে ঝরা শুরু …
টানা বাদলে ঘর জবজবে , ব্যাঙও থাকত ঘরের
কোণে
“বাঁদি কিরষেণ” সনাতন সারাদিন
ঝমঝম বৃষ্টির সঙ্গে বেজে বেজে রুয়েছে খুব …
চান করে এলে
গিন্নিমার হাতে শেষের ডালটা সূর্যাস্তের সঙ্গে পাতে ঢলে পড়তে
বিদেশাগত সাম্যের গানের এক বাঁও মেলে না …
গামবুট আর দস্তানার কাহিনীর পট খোলেনি কোনোদিন !
শেষ পাতের চুনোমাছের সঙ্গে
ইউরিয়ার গন্ধ মাখা আঙুল চাটার শব্দ উঠছে … ওই যে – !
No comments:
Post a Comment