Tuesday 22 October 2019

বাক্‌ ১৩৮ ।। অঞ্জন ঘোষ রায়



মাইরি বলছি

মাইরি বলছি,আমার ক্ষিদে নেই।
অনেক খেয়েছি কাগজ, ছাপার কালি, গোটা গোটা হরফ জল ছাড়াই।
বিচ্যুতি ঘটেনি আমার লক্ষ্যভেদে,
আমার সাড়া শব্দ না পেতে পেতে মোটা মোচ এর দুধওয়ালা আর পাওনা টাকা আদায়ের জন্য হানা দেয় না।
একটা মাছিও আমি গলতে দিইনি সেদিন ফুটপাথ দিয়ে, যেদিন ব্যারিকেড লাগিয়ে যোদ্ধারা তাস পিটছিল আয়াসে।
আমি সামান্য একটা গুলির শব্দে থতমত খাওয়ার পাত্র নই,
জাহাজের নোঙর কখনো জোয়ারে ভয় পায়না।
ডুমুর এর কষ লেগেছিল ইজ্জতে,
কয়েদীরা বেঁচে ছিল কিঞ্চিৎ দাসখতে।
একটা কথা বলে রাখি,
‘ভোর ভোর দুঃস্বপ্নের ভাঙনের সম্ভাবনা এলেই সুখকর যন্ত্রণার উদ্ভব হয়।’

হ্যাজাক এর আলোর মতোন তীব্র একটা বিন্দু আমার ধ্বসে যাওয়া মাথায়, পঙ্গু পেন্ডুলাmeর মতো দুলতে থাকে।
চারপাশে বিকট হাসি মুখ গুলো আস্তে আস্তে কঠিন আর শুষ্ক হয়ে যায়।
তারপর দুম করে শব্দ। আর একটা গ্ল্যামারাস বাজ পড়ার অভিজ্ঞতা পৃথিবীর আপনে আপ হয়ে যায়।
এখানে কি আমি শুধু আমার কথা বলতে জন্মেছি? আলবাত তাই! এটাই কি উচিত।
কতটা উঁচুতে গিয়েও পাক খেতে খেতে ভীতু চামচিকার মতো গোত্তা খেয়েছি বসাক বাড়ির দেওয়ালে,সেটা পাড়ার সেলুন এর হাজার মুখ দেখা একা যুবতী আয়নাটা জানে। 

সাত সকালে উঠে দেখি,
বাড়ির পাঁচিলে কে লিখে রেখে গেছে,
"এখানে যত্ন সহকারে কাঠে পোড়ানো হয়"।
মৃত্যুর আগে পাওয়া তেষ্টার মতো করুণ ডাক আসে তক্ষুনি নিজেকে ভালবাসবার।
 তুমি কি সত্যিই জানো না!! প্রথম সারিতে,
হৃদয় পুড়ে গেছে নির্লজ্জ তাপে এই বাড়িতে ,ঠিক শুকনো কাঠের মতই ঘি ছাড়া নির্দ্বিধায়।
এখানে সব ছিল, শব ছিল, রং ছিল,স্বাদ ছিল,প্রেম ছিল।আঙুল ভর্তি কথা ছিল,কেউ কিচ্ছু বোঝেনি,সময় পেরিয়ে গেছে।
ব্যালকনি থেকে উপচে পড়েছে রাস্তার দিকে শব্দ বাক্যের ফ্যানা। মিউনিসিপ্যালিটি থেকে ফক্কর হাসি হেসে  লোক এসে স্বচ্ছ শহর বানিয়ে দিয়ে চলে গেছে।
আশেপাশে প্রত্যেকে হা হুতাশ অন্ধ,কারো চোখে পড়েনি উন্মাদের হাত নাড়ানো অবিকল মিঠে সন্ধ্যার নেশাখোর ঝাউ গাছ এর মতন।
কেউ শুনতে পায়নি,তার গলার স্বর হুবহু অবিক্রীত পারদের মতই তরল।
কেউ লক্ষ্যই করেনি গিটার ধরলে তার দাঁতে কাটা নখ অনেক বেশি ধারালো হয়, সময় অসময়ে। 

No comments:

Post a Comment