Thursday 24 October 2019

বাক্‌ ১৩৮ ।। গুলজারের তিনটি কবিতা ।। অনুবাদ অর্ঘ্য দত্ত



ঈশ্বর-১



তোমার নিশ্চয়ই খুব খারাপ লেগেছিল, হে ঈশ্বর
উপাসনার মাঝে যখন
হাই তুলেছিলাম আমি--
উপাসনার এই বাধ্যতায় ক্লান্ত হয়ে গেছি আমি!
যবে থেকে জ্ঞানগম্যি হয়েছে
তবে থেকে শুনে আসছি,
ঈশ্বরই তৈরি করেছেন এই দিন, এই রাত
ঈশ্বরের হাতেই আছে ভালো-মন্দের চাবিকাঠি--
উপাসনা করো!
এ এক আজব বাধ্যতা
এ এক জালি কথোপকথন
এবং সেটাও একতরফা-- এমন একজনের সঙ্গে
কল্পনা দিয়ে আঁকা যার রূপ 

যাকে বিশ্বাসের কারণ‌ও গড়া কল্পনা দিয়ে।







ইশ্বর-২



দেওয়ালের এই পিঠে আছি আমি!
এদিকে তো রোদ‌ও আছে, সবুজের ছোঁয়াও!
পাতায় পাতায় শিশির‌ও পড়ে,
অলস কুয়াশা যদি আসে
ডালে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা ঢুলতে থাকে।
বৃষ্টি লম্বা তারের পরে নটিনীর মতো তিরতির নাচে
আর পলকে হারায়,

যে মরশুমই আসুক, রঙে রসে ভরিয়ে দিয়ে যায়!

কিন্তু এই কাঁচা দেওয়ালের অন্য পিঠে
কেন এমন নিস্তব্ধতা
কে আছে যে কোনো শব্দ করে না, শুধু 
দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসে থাকে‌!







ঈশ্বর- ৪



গোটা আকাশটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তোমার ছক দেখেছিলাম--

কালো খোপে সূর্য রেখে,
হয়তো ভেবেছিলে আমার সব ঘুঁটি খাওয়া যাবে,
আমি একটা প্রদীপ জ্বালিয়ে
নিজের পথ খুঁজে নিয়েছিলাম


হাতে একটা সমুদ্র নিয়ে আমার ওপর ঢেলে দিলে
আমি তার ওপর রেখে দিলাম নোয়ার জাহাজ
সময় চাললে তুমি, আর আমার দিকে তাকালে
সময়কে টুকরো করে আমি প্রতিটি মূহুর্ত বাঁচতে শিখে নিলাম


কিছু অলৌকিক কৌশলে তুমি আমার আমিত্বকে মারতে চাইলে
আমার এক সৈন্য তোমার চাঁদের বোড়েই খেয়ে নিল--


কিস্তিতে মৃত্যুকে রেখে ভেবেছিলে এবার তো মাৎ
আমি নশ্বর শরীরটা তোমাকে দিয়ে-- বাঁচিয়ে নিয়েছি অন্তরাত্মা


এখন গোটা আকাশ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখো আমার ছক


7 comments:

  1. খুব ভালো লাগলো।অর্ঘ্যর অনুবাদ পড়লে,মনেই হয়না অনুবাদ পড়ছি।
    এগুলো আমি অনুবাদ নয়(যেহেতু মূল হিন্দি কবিতা পড়িনি) কবিতা হিসেবে ই পড়লাম।

    ReplyDelete
  2. খুব ভালো লাগল।

    ReplyDelete
  3. তিনের অপেক্ষায় থাকছি

    ReplyDelete
  4. বাহ! সুন্দর লাগলো পড়তে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ।

      Delete
  5. সাবাশ, অর্ঘ্য। এত সাবলীল ভাষান্তর, ভাবের অন্তর না ঘটিয়ে...

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ, দাদা।

      Delete